আমৃত্যু শৈশবে
আসাদজামান
সত্যি করে মন খুলে একটা কথা কই?
পাইনা খুঁজে কোথাও যে শিশুর হইচই!
আহা!সেই, হৈ হুল্লোড় কানামাছি দিন
সবখানেই আলোর ছটা বাহারি রঙিন।
যায় না পাওয়া এখন যে এমনতর মজা
মনে মনে সবাই যেন একেকজন রাজা।
এমন খেলা কত্ত আগে খেলেছি কবে!
মগ্নমাতাল আমরা যেন আমৃত্যু শৈশবে
সুযোগ পেলেই উঁকি!স্মৃতির জানলায়
এই দৃশ্য কেবল আবহমান বাংলায়।
আজও ভুল করে কেউকেউ
আ|সা|দ|জা|মা|ন
আমাকে কবি ভেবে ভুল কোরোনা কেউ ।
অবশ্য করলেই কার কি যায় আসে!
অতি সাধারণ আমি, নিজেকে মানুষ বলে
দাবি করি মাত্র। সারাক্ষণ নিমগ্ন শ্রোতা হয়ে
বসে থাকি কবিতার পাশে।
কিরূপে গড়ালে জল ভেতরে জাগে ঢেউ ~
আমাকে কবি ভেবে ভুল কোরোনা কেউ।
যাকিছু অর্জন আমার ভেস্তে যায়।
সগৌরবে কবিতার প্রচার থেকে বিরত থাকি
ভাবি; মানুষের ভুলগুলো ভেঙে যাক।
কি উৎকন্ঠা নিয়ে পাঠক আবিষ্কার করে
একজন কবি কে, সে কথা জানার পর
আমি শুধু পাঠক কে ফেরাতে চেষ্টা করেছি
তার উপর্যুপরি ভুল থেকে।
আমাকে কবি ভেবে ভুল কোরোনা কেউ।
অবশ্য করলেই কার কি যায় আসে!
কবিতা যে সহজ কিছু নয়! সে আমি
বেশ বুঝে গেছি। তাইতো–
নিজেকে কবেই সরিয়ে নিয়েছি কবিতার
শিবির থেকে।গুটিয়ে নিয়েছি মগজের
বুনন কৌশল,ছেড়ে দিয়েছি কলমের কাব্যকলা।
বলি–
আমাকে দিয়ে চাষ করাতে পারো অকর্ষিত
জমিন! মৃৎশিল্পের কাজ!
বিমান চালনা,এমনি আরও কত কি!
কিন্তু কবিতা ! ও আমাকে দিয়ে হবে না।
আমাকে কবি ভেবে ভুল কোরোনা কেউ।
স্রোতের জোয়ারে কতকিছুই তলিয়ে যায়
স্বাক্ষী জলের ঢেউ
আজও আমাকে কবি ভেবে ভুল করে
কেউকেউ।
৩০.০৬.২০২১
আমাতে খেলে দোল
আ|সা|দ|জা|মা|ন
নিজের বলতে নেই কিছু নেই;
এক এক করে সবকিছু পরবাসে যার
মনের ভিতর দ্বিধা নিয়ে দেই নিজেকেই ধিক্কার।
এই আমি আজ দ্বিধা সংকটে
আমারে খুঁজো,কে আছো আপনজন?
মনে মনে আমি তাহারেই খুঁজছি সারাক্ষণ।
নিকট আমার দূর বহুদূর
দূর কতদূর জানি না
পৌঁছে দেখি এই আমিটা আগের কোন আমি না!
তবে কি আমার ভুল পথচলা?
আমাতে খেলে দোল
আমারে খুঁজতে হন্যে যারা, বাধায় গন্ডগোল।
নিজের বলতে নেই কিছু নেই ;
ফেরারি পথিক খুঁজে ফেরে আশ্রয়
পায় যা কিছু আস্থার সাথে,বলে সে আমার নয়!
নিঃসংকোচে —
অকপটে সেই সত্য স্বীকারে,মনে নেই কোন ভয়
খুঁজে খুঁজে যে পায় না আমারে
সেইতো আপন হয়!
২৯.০৬.২০২১
ফুলের কানে কানে
একটা ভ্রমর বললো গল্প ফুলের কানে কানে
শুনবে কিছু কথা তোমায় বলবো গানে গানে?
কন্ঠ আমার খুব কি খারাপ গান শোনাতে আসি
বললেনাতো আমায় ডেকে কখনো ভালোবাসি!
জানি না ফুল কখন যেন প্রেমের গান গায়
চুপটি করে থাকে ভ্রমর শোনার অপেক্ষায়।
ফুল কি তবে ভুল করেছে না বলে সেই কথা?
সেটা নিয়ে ভ্রমর মনে যত প্রগলভতা
একতরফা হয় না প্রেম দুজনার,সমান মত চাই
ভালোবাসি তোমায় আমি বলিনি কখনো তাই।
২৯.০৬.২০২১
লাউশাকে
আ|সা|দ|জা|মা|ন
বাহারি বরণ চারপাশে সব সবুজ আয়োজনে
পড়ে থাকে মন আকন্দ গাছ ধুতরার বনে —
নেই আমাদের স্যালমন ফিস,চিংড়িটা কম কি?
মাটির হাঁড়ির রান্না সে ভাত, সাথে লাউ টাকি!
নিভে যাওয়া মাটির চুলো, দমের সাথে ধোঁয়া
এ যেন ঠিক বাংলার স্বাদ,বাংলা মায়ের ছোঁয়া
তোমার ভালো লাগতেই পারে গ্লাডিওলাস কিম্বা চেরিটাকে–
আমার ভালোবাসা লুকায়,চিরচেনা লাউশাকে।
২৯.০৬.২০২১
প্রাকৃতিক লকডাউন
আসাদজামান
গ্রাম কিম্বা টাউন প্রাকৃতিক লকডাউন
এত রব সাজ সাজ,বেরও দেখি আজ!
ভোর থেকে বৃষ্টি ঝরে কান্না অবিকল
এত কান্না শেষেও তার ফুরায় না জল।
চললে পরে এভাবে বৃষ্টি বৃষ্টি খেলা
বেরুচ্ছেনা কেউ,না থাকলে কাজ মেলা
নেই কেউ চারপাশে মনে রেখে ভীতি
এমনি করে ঘরবন্দী রাখছে কি প্রকৃতি?
সাহস করে বের হলেও সুরক্ষা গাউন!
চলুক না এভাবেই প্রাকৃতিক লকডাউন।
২৯.০৬.২০২১