সামাজিক দূরত্ব নয়, চাই সামাজিক প্রতিরোধ: এম আসলাম লিটন
.
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। মানুষ ভাল নেই। পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে।
একদিকে মানুষের উদাসীনতা, গুরুত্বহীনতা অন্য দিকে সরকারের সমন্বয়হীনতা পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহতার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার ঘোষিত লক-ডাউন বা বিধি-নিষেধ কোনটাই কার্যকর হচ্ছে না। আবার লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে রুটি-রুজির দুশ্চিন্তা মানুষকে গ্রাস করছে। মানুষ এখন উভয় সংকটে পড়েছে। একদিকে করোনার ভয়াল ছোবল, অন্যদিকে জীবন-জীবিকার সংকট। অথচ দুটোই এখন জরুরি।
এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য শুধু সরকারের উপর ভরসা করে বসে থাকলে হবে না। নিজেদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজের হাতেই তুলে নিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নয়, সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমেই নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
আর এরই অংশ হিসেবে অধিক আক্রান্ত প্রত্যেকটি জেলার পাড়া, মহল্লা, গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন স্তরের মানুষের সমন্বয়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে নিজেদের উদ্যোগেই। যে কমিটির কাজ হবে-
* প্রত্যেককে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করা। ক্ষেত্র বিবেচনায় বাধ্য করা।
* শারিরীক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে উদ্বুদ্ধ করা । ক্ষেত্র বিবেচনায় বাধ্য করা।
* বিশেষজ্ঞ প্রণীত অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি ও বিধি নিষেধ মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা।
* লকডাউনে অকারণে ঘুরে বেড়ানো বা আড্ডা দেয়া লোকজনকে বুঝিয়ে তা বন্ধ করা।
* অকারণে জনসমাগম বন্ধে সচেষ্ট হওয়া।
* উপসর্গ দেখা দিয়েছে এমন সকল ব্যক্তিদের কোভিড টেস্টের আওয়াতায় আনার ব্যবস্থা।
* আক্রান্তদের আইস্যুলেসনের ব্যবস্থা করা।
* অসুস্থ্যদের চিকিৎসা সেবায় সহায়তা করা।
* প্রশাসন, সরকার ও স্থানীয় সামর্থবানদের সহায়তায় একটা ফান্ড গঠন করা এবং ফুড ফান্ড কঠন করা।
* সেই ফান্ড থেকে লক-ডাউনে যাদের ঘরে খাবার নাই তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া।
* সেই ফান্ড থেকে স্বাস্থ্যউপকরণ সরবরাহ করা।
* টীকা গ্রহেণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। টীকার রেজিস্ট্রেশনে সহায়তা করা।
এখনই উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। নইলে এই মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা যাবে না। পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। একমাত্র সামাজিক প্রতিরোধ ও সামজিক উদ্যোগই আমাদের রক্ষা করতে পারে। যত দেরি করব আমরা, ততই অন্ধকার সময় এগিয়ে আসবে।