সমকালের একটি খবরের শিরোনাম: মডেলদের বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণসঙ্গীদের তালিকা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সৌদি কিবা আরব আমিরাত অথবা কুয়েতের মতো তেল বিক্রি করে ধনীয় হওয়া দেশগুলোর রাজপুত্রদের বিলাসী জীবন-যাপনের খবর ইন্টারনেটে সার্চ করলেই পাওয়া যাবে। কথিত আছে, তাদের টাকার একটি বিরাট অংশই খরচ হয়ে যায় ফ্রান্স ও মোনাকোর দামি হোটেল ও ক্যাসিনোতে। নারী ও জুয়ার পেছনে। যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাস তো বটেই।
সুতরাং, বাংলাদেশেও যারা জনগণের পয়সা লুট করে; জনগণকে ব্ল্যাকমেইল করে; জনগণকে ঠকিয়ে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, তারা এই বিপুল অর্থ কোথায় খরচ করবেন? দেশেই একাধিক বাড়ি কেনা, বিদেশে সেকেন্ড হোম বানানো, কানাডার বেগমটপাড়া গড়ে তোলার পরও তো অর্থ ফুরায় না। তাছাড়া খুব ব্যতিক্রম ছাড়া সকল পুরুষের মনের ভেতরেই বিনোদন জগতের সুন্দরীদের একান্ত সান্নিধ্য পাওয়ার বাসনা ক্রিয়াশীল থাকে। ফলে যখন তাদের হাতে বিপুল অর্থবিত্ত আসে, তখন তারা সেই টাকা খরচ করে ওই কাঙ্ক্ষিত নারীদের সাথে দেশের বিভিন্ন রিসোর্ট, দামি হোটেল এমনকি অধিকতর নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদেশের হোটেলে গিয়ে তাদের সাথে সময় কাটান।
তো এখন যদি সত্যিই এই তালিকা করা হয়, সেটি বেশ দীর্ঘ হয়ে যাবে। সেই তালিকায় কি বিরাট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ আরও অনেকের নাম আসেব না? সব নাম কি আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনী প্রকাশ করবে? সাংবাদিকরা জানলেও কি সব নাম প্রকাশ করতে পারবেন? প্রকাশিত হওয়ার আগেই কী করে তথ্যের মৃত্যু ঘটাতে হয়, তা কি এই দেশের প্রভাবশালীরা জানেন না? অতএব তালিকা যদি সত্যিই হয়, তাহলে সেখানে তৃতীয় বড়জোর দ্বিতীয় টায়ারের লোকদের নাম মানুষ জানবে। প্রথম টায়ারের নামগুলো গণমাধ্যমে আসবে না—এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন।
মাঝখান দিয়ে তালিকা তৈরির সাথে যুক্তদের ভালো উপাজর্ন হবে। কারণ যারা মডেলদের সাথে বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণে গিয়েছেন, তালিকায় বাদ থাকার শর্তে তারা নিশ্চয়ই মোটা অংকের পয়সা ঢালবেন। সেই পয়সা কোথায় কোথায় যাবে, রাষ্ট্রের কোন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে, তা আমরা প্রলেতারিয়েত জনগণ জানব না। আবার শুধু প্রমোদ ভ্রমণই নয়, বরং এইসব লোক বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারও করেছেন। তো সাম্প্রতিক অভিযানের সঙ্গে সেই টাকা পাচারের কোনো যোগসূত্র আছে কি না—তাও তো এখনও পরিস্কার নয়।