Homeবিবিধবিপ্লবী সংগ্রামী নেত্রী আশালতা দেবীর আজ ৩০ তম মৃত্যু দিবস, বিনম্র শ্রদ্ধা 

বিপ্লবী সংগ্রামী নেত্রী আশালতা দেবীর আজ ৩০ তম মৃত্যু দিবস, বিনম্র শ্রদ্ধা 

বিপ্লবী সংগ্রামী নেত্রী আশালতা দেবীর আজ ৩০ তম মৃত্যু দিবস, বিনম্র শ্রদ্ধা

বিপ্লবী সংগ্রামী নেত্রী (আশালতা দেবী) আশা চক্রবর্তীর আজ ৩০ তম মৃত্যু দিবসে পরম শ্রদ্ধাবোধে স্মরণ করি আমরা আর নাটোর নিউজ এর পক্ষ থেকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা আর ফুলেল ভালোবাসা।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ, প্রখ্যাত কমিউনিষ্ট নেতা, দিনাজপুরের তেভাগা আন্দোলনের বীর সৈনিক, দিনাজপুরের মানুষের অকৃতিম বন্ধু, বিশিষ্ট আইনজীবী বরোদা ভূষন চক্রবর্তীর স্ত্রী আশালতা দেবী চক্রবর্তী।

বিপ্লবী নেতা বরোদা ভূষন চক্রবর্তী বৃটিশ বিরোধী ও তেভাগা আন্দোলনে জেল খেটেছেন এক যুগেরও বেশী। জেল খেটেছেন অগ্নিকন্যা আশা লতা দেবী। নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁদের বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সংগ্রাম ও ত্যাগ অনুপ্রানিত করে আমাদের।

একটি স্মরণীয় ঘটনাঃ
আমার জন্মের আগের বছর ১৯৬৬ সাল। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইযুব খাঁন ১টি নির্বাচনী জনসভায় ঠাকুরগাঁওয়ে আসবে। ঠাকুরগাঁও মহকুমা তখন দিনাজপুর জেলা এর ভিতর ছিল। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক তখন ছিলেন আবদুর রব চৌধুরী, এসডিও ছিলেন আজিজ সাহেব।

বিপ্লবী সংগ্রামী নেত্রী আশালতা দেবী চক্রবর্তী ও বরোদা ভূষন চক্রবর্তীর বড় সন্তান ডাঃ সমর চক্রবর্তীর একটা গাড়ি ছিল ভক্সওয়াগন। এসডিও সাহেব সেটা রিক্যুইজিশনের জন্য চাইলে, বিপ্লবী নেত্রীর স্বামী বরোদা ভূষন চক্রবর্তী গাড়ি দিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, নীতিগত কারণে গাড়ি দিবেন না। আইয়ুব সাহেব নির্বাচনী জনসভা করতে আসছে। আর তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর ভাইস চেয়ারম্যান।

বরোদা ভূষন চক্রবর্তী গ্রেফতার হলেন, আর তার সন্তানের গাড়ির চাবি বরোদা ভূষন চক্রবর্তীর নির্দেশ বড় সন্তানের স্ত্রী বাসার ভিতরের কুয়োতে ফেলে দেন। সন্তানের গাড়ী ক্রেনে করে উঠিয়ে ডিসির বাড়ীর মাঠে রাখা হলো। তৎকালীন ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার An arrest এ নামে প্রথম পৃষ্ঠার মাঝখানে এ ঘটনা সম্পূর্ণ তুলে ধরা হয়। বৃহত্তর দিনাজপুরে আন্দোলন শুরু হলো।

ডাকসুর জিএস এস,এ,বারী এ টি পরবর্তী তে মন্ত্রী, এমপি গোলাম রহমান, আমানুল্লাহ সরকার এডভোকেট,
রিয়াজ রহমান এর নেতৃত্বে পার্টি পরিচালিত হচ্ছে। আর মনু সাংবাদিক আ,ন,ম,গোলাম মোস্তফা (শহীদ বুদ্ধিজীবি), হক, হাসান, মিজান, জাফর, সামাদ সাহেবদের নেতৃত্বে ছাত্ররা রাস্তায় নামে।
ঢাকা হতে মহিউদ্দিন (পরে বাকশাল)আর ব্যারিস্টার হক এলেন। দিনাজপুর ইনস্টিটিউট এর মাঠ লোকে লোকারন্য। আশা চক্রবর্তী ঐ মিটিংয়ে স্বামীর গ্রেফতারের তীব্র বিরোধীতা করে প্রতিবাদ সভায় বলেন, আমি এ সরকারকে হাইকোর্টে মোকাবেলা করবো। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বেলুচিস্তানের এমপি গাউস বক্স বজেন্জো প্রতিবাদ করে বক্তব্য দিলেন। প্রাদেশিক পরিষদে এমপি কাশেম সাহেব প্রতিবাদ করে বক্তব্য দিলেন।

আশা চক্রবর্তী ঢাকায় এলেন, হেবিয়াস কর্পসের প্রস্তুতি নেয়ার সময় মির্জা গোলাম হাফিজ এডভোকেট (পরবর্তীতে স্পীকার) আশা চক্রবর্তীকে বলেন, জুলফিকার আলী ভূট্টো (পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট) বৌদি এই মামলাটা করতে চান। আশা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের রাজনৈতিক পরিবারের মানুষ আপনি, ভূট্টো নয়, আপনি মামলাটি পরিচালনা করুন। মির্জা সাহেব মামলা শুরু করলেন। তখন মোনায়েম খাঁ গভর্নর।

সরকার বরোদা ভূষন চক্রবর্তীর জীবন বৃত্তান্ত দিয়ে প্রমান করতে চাইলেন, তিনি একজন হিন্দু ও কমিউনিস্ট নেতা। প্রেসিডেন্টের সফরে গাড়ি না দিয়ে করেছে দেশদ্রোহিতা, ইত্যাদি। হাইকোর্ট জানালো প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় কোন কাজে নয়,নির্বাচনী জনসভায় এসেছেন। বরোদা ভূষন চক্রবর্তী তখন দিনাজপুর জেল থেকে বদলি হয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে।

আশা চক্রবর্তী মির্জা সাহেবকে বললেন আপনারা আপনাদের দাদা বরোদা ভূষন চক্রবর্তীকে নিয়ে আসুন। দিনাজপুর যেতে হবে আমাকে। তিন দিন পর বরোদা ভূষন চক্রবর্তী যখন ঢাকা থেকে দিনাজপুর রেল স্টেশনে নামেন, তখন লোকে লোকারন্য রেল স্টেশন, আর বাড়িতে আশা চক্রবর্তী। কেউ দেখে কখনো বুঝতেও পারেনি আশা চক্রবর্তী এ আইনি জয়ে কতটা খুশি হয়ে ছিলেন। স্বামী স্ত্রী দুজনেই বিপ্লবী, তাঁদের আচরণই হয়ত এমনই। প্রায় দেড় বছর পর আশা চক্রবর্তী বৃটিশদের জেল থেকে যে দিন বের হয়েছিলেন বরোদা ভূষন চক্রবর্তী বাড়িতে ১টা ইলিশ মাছ রেখে পার্টি মিটিং য়ে চলে গিয়েছিলেন।

কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সন্তান তরুন ফিজু দাদার তথ্য।
Tarun Phizoo
Jemey Hafijz এর ওয়াল থেকে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments