Homeজেলাজুড়েনাটোরে ভাটোদাঁড়া কালিপূজা শুরু

নাটোরে ভাটোদাঁড়া কালিপূজা শুরু

নাটোর নিউজ: নাটোর সদর উপজেলার ভাটোদাঁড়া গ্রামে শুরু হয়েছে ২৮৩ বছরের পুরনো তিনদিন ব্যাপী ‘ভাটোদাঁড়া কালিপূজা ও পাঁঠাবলি’ উৎসব। শনিবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে কালিপূজার উদ্বোধন করেন নাটোর পৌরসভার মেয়র ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি উমা চৌধুরী জলি। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সুবীধ কুমার মৈত্র অলোক, পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রসাদ কুমার তালুকদার বাচ্চা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শ্যামসুন্দর আগরওয়ালা, লক্ষণ পোদ্দার, অশোক কুমার, ভাটোদাঁড়া শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দির কমিটির সভাপতি তপন পাল, সহ-সভাপতি পরিমল কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার ঘোষ সহ বিভিন্ন ভক্তবৃন্দ। এরপর ৮টি পাঁঠা বলির মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাঁঠা বলি উৎসব ও মেলা।

মেলা উপলক্ষে ইতোমধ্যেই কালিবাড়ি চত্বরে বসেছে মিষ্টির দোকান, খেলনা, নাগরদোলা, খাট,আলমারি, পাঁপড়, চটপটিসহ শতাধিক বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক। পূজা মণ্ডপ চত্বরে বসানো হয়েছে ৫টি সিসি ক্যামেরা।

মেলা উদযাপন কমিটির সহসভাপতি গণেশ চন্দ্র ভট্টাচার্জ জানান, এই পূজায় গত বছর ২৮০টি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। এ বছর এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে এখানে তিন দিনে প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারতের কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ ও মালদহ জেলা থেকে আসেন দর্শনার্থীরা। শনিবার রাত থেকে এখানে পূজা শুরু হওয়ার পর রাত ১২টায় আটটি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে। রবিবার ও সোমবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় চলবে এই পাঁঠা বলি। এর পর মঙ্গলবার বিকালে পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলা চত্বরে বসেছে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী, খাবার, বইয়ের দোকান, মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রী, নাগরদোলা। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাড়ি থেকে বিভিন্ন ফল ও মানতের পাঁঠা নিয়ে পূজা মণ্ডপে আসছেন। তাদের স্বাগত জানাতে সামনে-পেছনে আসছে ঢাক বাদকরা। ভক্তরা পূজা মণ্ডপে এসে তাদের নাম ও ফি প্রদান শেষে সঙ্গে আনা বিভিন্ন সামগ্রী মা কালীকে প্রণাম শেষে অর্পণ করছেন।

মেলা কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার ঘোষ জানান, ভক্তরা তাদের মানত করা পাঁঠা মণ্ডপে এনে নির্ধারিত ফি প্রদান করেন। দুপুর থেকে পাঁঠাবলি শুরু হলে পাঁঠাগুলোকে মন্দির কমিটির সদস্যরা পার্শ্ববর্তী পুকুরে স্নান শেষে মন্দির প্রাঙ্গনে এনে বলি দেন। বলি দেওয়া কাজে দু-তিনজন ব্যক্তি নির্ধারিত থাকেন। এ সময় কমিটির সদস্যরা তাদের সহযোগিতা করেন। বলি শেষে মাথাটি রেখে পুরো শরীরটিই সংশ্লিষ্ট মানতকারীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই দীর্ঘদিন থেকে এখানে পাঁঠাবলি চলে আসছে।

মেলা প্রাঙ্গনে খাবারের দোকান মেলা প্রাঙ্গনে খাবারের দোকান মেলা প্রাঙ্গনে পাঁঠাবলি মানতে আসা দিঘাপতিয়ার পশ্চিম হাগুরিয়া গ্রামের সীমা রাণী জানান, পরিবারের মানত হিসেবে তিনি তার পরিবারের সদস্য, পাঁঠা ও বিভিন্ন ফল নিয়ে পূজা মণ্ডপে এসেছেন। মণ্ডপে মানত দিতে পারায় ও কালিমাকে প্রণাম করতে পারায় তারা অত্যন্ত খুশি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments