গুরুদাসপুরে কুড়িয়ে পাওয়া ৭০০ টাকা ফেরত দিলেন ৩ খুদে খেলোয়ার
গুরুদাসপুর নাটোর নিউজ: নাটোরের গুরুদাসপুরে খেলার মাঠে কুড়িয়ে পাওয়া ৭০০ টাকা ফিরিয়ে দিলো খুদে তিন শিক্ষার্থী খেলোয়ার। এমন ঘটনা একটি দৃষ্টান্ত বলেছেন স্থানীয়রা। ছোট ছোট বাচ্চারা এমনিতেই টাকার প্রতি থাকে প্রচণ্ড নেশা আকর্ষণ। টাকা পেলে কিনতে চায় খেলনা খেতে চায় আইসক্রিম সহ নানাবিদ সামগ্রী। অথচ ওই ছোট্ট শিশুরা নিজেদের লোভকে সংবরণ করে ফিরিয়ে দিলো কুড়িয়ে পাওয়া টাকা। এ ঘটনায় প্রশংসিত হয়েছেন ওই খুদে খেলোয়াড়রা।
দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমান জানান, এই তিনজন বাচ্চা নুরাইন, স্বপ্নীল ও শ্রাবণ। এদের ৩জনই ধারাবারিষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। নুরাইন পঞ্চম শ্রেণীর এবং স্বপ্নীল ও শ্রাবণ দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ৩ জন গতকাল বিকেলে ধারাবারিষা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা করার সময় ১টি ৫০০ টাকার নোট এবং ২টি ১০০ টাকার নোটসহ সর্বমোট ৭০০ টাকা কুড়িয়ে পায়। ৭০০ টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার পর কোমলমতি এই ৩ জন শিক্ষার্থী টাকার প্রকৃত মালিক কে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য টাকার মালিক এর সন্ধান করতে করতে আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে আমাদের কারো কিছু হারিয়েছে কিনা। উল্লেখ্য সে সময় আমরা ধারাবারিষা উচ্চ বিদ্যালয় মঞ্চে বসে একসাথে দশ-বারোজন আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের মধ্যে থেকে নেওয়াজ শরীফ নামে এক ছোট ভাই বলে উঠলো তোমরা কি ৭০০ টাকা পেয়েছ? তোমরা টাকা পেয়ে থাকলে ওই টাকার প্রকৃত মালিক আমার বড় ভাই মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
নেওয়াজ শরিফের কথার সূত্র ধরে কালাম কে ফোন করে জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, আসলেই কালামের ৭০০ টাকা হারিয়েছে। তখন কালামকে জরুরী ভিত্তিতে স্কুল মঞ্চে আসতে বলা হয়। কালাম স্কুল মঞ্চে আসলে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সবার উপস্থিতিতে ৭০০ টাকা কুড়িয়ে পাওয়া ওই ৩ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী কালামের হাতে তুলে দেয়(দ্বিতীয় ছবিতে)। বন্ধু কালাম ৭০০ টাকা হাতে নিয়ে তাদের সততায় মুগ্ধ হয়ে ওই ৩ জনের হাতে ৭০০ টাকা দিয়ে বলে তোমরা বাজারে যেয়ে যা খুশি তা খাবে। তোমরা খেয়ে যে কয় টাকা অবশিষ্ট থাকবে সে কয়েকটাকা আমাকে দিবে। কিন্তু তারা ৩ জনই টাকা নিতে অস্বীকার করলে কালাম প্রতিনিধি নেওয়াজ শরীফ এর মাধ্যমে ওদের ৩ জনকে বাজারে দোকানে পাঠিয়ে তাদের পছন্দে ২ প্যাকেট নুডুলস এবং ১বোতল ২৫০ মিলি সেভেন আপ কিনে দেওয়া হয় ।
বিদায় মুহূর্ত কুড়িয়ে পাওয়া কোমলমতি ৩ জন শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে এরকম আরো কিছু কুড়িয়ে পেলে সেটারও প্রকৃত মালিক খুঁজে বের করে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সদুপদেশ দেওয়া হয়। পরিশেষে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই হে আল্লাহ , আপনি এই ৩ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর জ্ঞান-গরিমা বাড়িয়ে দিন এবং তাদের
মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন মানবিক কাজ করার তৌফিক দিন আল্লাহুম্মা আমীন।