পথের শেষে মিলিয়ে গেছে কতো অনুভূতি ! আঞ্জুমান আরা
প্রায় আড়াই বছর এ বাসায় ভাড়া এসেছি। ছাদে উঠিনা কখনও। ঈদের বিকেলে ছবি তুলতে এই প্রথম ছাদে গেলাম। আবহাওয়া ভাল ছিল। ঝিরিঝিরি বাতাস । ভাল লাগছিল। মৃত্তিকা ও আমি ছাদে অনেক ছবি তুললাম। হঠাৎ খেয়াল করি পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদগুলো ঈদের বিনোদন কেন্দ্র। অনেকেই আড্ডা দিচ্ছে ও ছবি তুলছে।
এক ভদ্রলোককে হঠাৎ খেয়াল করি মৃত্তিকার ছবি তুলছে । ফ্রেমে যে আমিও আছি বুঝতে অসুবিধা হলোনা। তাকিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করলাম চেহারায়। ভদ্রলোক ইশারায় মৃত্তিকাকে দেখায় বোঝালো আপনার মেয়েটি অনেক কিউট। ভদ্রতা করে হাসি দিলাম। একটু অস্বস্তি হচ্ছিল। রাসেলকে ফোন দিয়ে ছাদে ঢাকলাম। তিনি তখন মুভি দেখতে ব্যস্ত যেতে অপারগতা জানালো। রাসেলের ওপর একটু রাগ করে ছাদ থেকে নামলাম না। চারপাশে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছি। পেছন দুইবার চোখ যেতে দেখলাম, তিনি আমাকেই দেখছেন। তাকানো এত গভীর যেন আমার ভেতরটা সব পড়ে ফেলছেন। কিছু দৃষ্টির সামনে বেশিক্ষণ তাকানো যায় না। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।
হঠাৎ ভালো লাগলো। মনে পরলো , এমন চলতি পথে বাসে , ট্রেনে , পথে, ভীড়ের মাঝে এমন কতজনের সাথে তো চোখাচোখি হয়েছে, একটু ভাললাগা কাজ করেছে। পথের শেষে আবার মিলিয়েও গেছে সেই অনুভূতি। আজও সেই অনুভূতির খোঁজ পেলাম। নামধাম জানা নেই, নেই পরিচয়। অথচ চোখ দুটো আটকে আছে মনে।
নিচে নেমে রাসেলকে বললাম ঘটনা। আর বললাম অনুভূতি মরে নাই । মাঝ বয়সেও মনে পুলক লাগে। মনটা বেঁচে আছে। ফলাফল – রাসেল গতকাল সন্ধ্যায় পর আমাকে চা বানিয়ে দেয়নি।