Homeমুক্তমতচিকিৎসকদের আচরণ পরিবর্তন জরুরী - চঞ্চল কুমার ভৌমিক

চিকিৎসকদের আচরণ পরিবর্তন জরুরী – চঞ্চল কুমার ভৌমিক

চিকিৎসকদের আচরণ পরিবর্তন জরুরী – চঞ্চল কুমার ভৌমিক

দক্ষিণ ভারত সব চিকিৎসার কেন্দ্র। বাঙ্গালীর বুকে ব্যাথা হলেই তার বাড়ী ট্যাপামারী মার্কা গ্রামে হলেও লোকজন বলে, বাংলাদেশে চিকিৎসা নাই সোজা ব্যাঙ্গালুরু নারায়না হাসপাতালে যাও, দেবী শেঠী আছে নো চিন্তা। মানুষজন জমিজমা বিক্রি করে সাথে দালাল নিয়ে ( সরি গাইড বলা উচিৎ ছিলো) ব্যাঙ্গালুরুর পথে রওয়ানা দেয়৷ সেখানে গিয়ে প্রথমেই খাবারের সমস্যায় পড়ে। ঐ খাবার মুখে রোচেনা।

হাড়িপাতিল কিনে সিদ্ধভাত খেয়ে কষ্টে দিন গুজরান করে দেবী শেঠীর সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য। কিন্তু শেঠীরে পাওয়া ডিফিকাল্ট ব্যাপার, এক শেঠী কয় জায়গায় যাবে, তার এসিস্টেন্ট মুত্ত্যুস্বামী, জীবিতস্বামী মার্কা নামের ডাক্তারেরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে, এই দেবী স্যার কাল আইবো পরশু আইবো বলে চিকিৎসাপাতি দেয়। লোকজন মনে কিঞ্চিৎ কষ্ট নিয়ে আসে দেবী শেঠীর সাক্ষাৎ না পেয়ে। বাংলাদেশেও শেঠীর মতোন ডাক্তার আছে। বয়স কমগুলার কাছে লোকজন যায়না ভয়ে , এদের ব্যবহার খুবই ভালো কারণ এরা বুঝে নিয়েছে ভারতে যাওয়ার একমাত্র কারণ ভালো ব্যবহার, হয়রানী আমাদের দেশের থেকেও বেশী ফলে নতুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা ব্যবহার পুরা পালটায় ফেলছে। দেবী শেঠী মার্কা মা/বাবা ডাকা শুরু করেছে রোগীদের। এটা ভালো লক্ষ্মণ কিন্তু বয়স্কদের আগের অভ্যেসই আছে।

এদের কাছে গেলে প্রথমেই ধমক দিয়ে দেয়, মিয়া সব শেষ করে আসছেন মিয়া, ৯০% এর উপর ব্লক মিয়া, খালি গোস্তো খাইছেন আর বিড়ি টানছেন, যান মিয়া বাইপাস ছাড়া বুদ্ধি নাই, এই জামান ইনার বাইপাসের ডেট দিয়া দাও, আমি ব্যাংকক যাইতেছি, ফিরা অপারেশন করমু। রোগী ভয়ে বলে, স্যার খরচপাতি কেমন লাগতে পারে? আরে মিয়া যে রোগ ফান্দাইছেন আবার খরচাপাতি, যা লাগবে মিজান বইলা দেবে যান এখন। লোকজন খুবই ঘাবড়ে গিয়ে চেম্বারের বাইরে গিয়ে বলে, নাহ্ ব্যাঙ্গলুরুই যাই, দেবী শেঠী বাবা/মা বইলা কাজ করি দেবে। টাকা ফ্যাক্টর না, যে ব্যবহার স্যারের, কোন নাড়ী কাটতে কোনডা কাটবো ঠিক নাই।

বাঙ্গালী আসলে ভালোবাসার কাঙ্গাল, টাকাপয়সা বিষয় না, ভারতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেশের প্রায় আড়াই গুণ টাকা বেশী লাগে কিন্তু মানুষ তবুও যায় কারণ মুত্ত্যুস্বামী, জীবিতস্বামীরা বাবা/মা বলে মাথায় হাত বুলিয়ে পকেট খালি করে দেয়। প্রব্লেম চিকিৎসা না, প্রব্লেম দৃষ্টিভঙ্গির, সেটা শুরু হচ্ছে, দেশের তরুণ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা সেটা শুরু করেছেন। আশাকরি মুত্ত্যুস্বামীদের দিন শেষ হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments